বিএনপিতে আটকে যাচ্ছে সংস্কার

বিএনপিতে আটকে যাচ্ছে অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত

দুই কক্ষবিশিষ্ট সংসদের পক্ষে বিএনপি-জামায়াত, এনসিপিসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল। উচ্চকক্ষে এমপি হবেন ১০০ জন। জামায়াত-এনসিপি, এবিপার্টিসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল চাচ্ছে নিম্নকক্ষে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে উচ্চকক্ষের প্রতিনিধিরা নির্বাচিত হোক। কিন্তু বিএনপিসহ সমমনা কয়েকটি দল এতে রাজি নয়। বিএনপি বলছে, নিম্নকক্ষে নির্বাচিত এমপিদের সংখ্যানুপাতে উচ্চকক্ষের প্রতিনিধিত্ব নির্বাচিত হোক।
গতকাল রোববার ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সপ্তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে গতকালসহ মোট চার দিন সংসদের উচ্চকক্ষের প্রতিনিধিত্ব কিভাবে হবে-তা নিয়ে আলোচনা হলেও সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি কমিশন।
শুধু এটাই নয়, ঐকমত্য কমিশনের আরেক গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয় সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি নিয়ে। দুই দিন এই কমিটি নিয়ে আলোচনা হয় কমিশনের বৈঠকে। জামায়াত-এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, এবি পার্টি, ডান-বাম রাজনৈতিক দল ও জোট চায় নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি), মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং তথ্য কমিশন- এই ছয় কমিশন নিয়োগ দেবে সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি। জামায়াত-এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ ডান ও বামপন্থী অধিকাংশ রাজনৈতিক দল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এই প্রস্তাবে একমত পোষণ করেছে। কিন্তু গত সপ্তাহ কমিশনের বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা শেষে বিএনপির বিরোধিতায় তা আটকে যায়। গতকালের বৈঠকেও দীর্ঘ আলোচনার ফল শূন্য। বিএনপি সরাসরি ‘সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি’ গঠনের বিপক্ষে মত দিয়েছে। ফলে দিন শেষে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত ছাড়াই গতকালের বৈঠক মুলতবি করা হয়। আগামী বুধবার ফের কমিশনের বৈঠক বসবে।
বিকেলে কমিশনের বৈঠক শেষে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে, প্রাপ্ত ভোটের মাধ্যমে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে ভোট করার জন্য বেশির ভাগ দল মতামত দিয়েছে। কিছু কিছু দল এই বিষয়ে সুস্পষ্ট আপত্তি জানিয়েছে। অধিকাংশ রাজনৈতিক দল যেহেতু দ্বিকক্ষ পার্লামেন্ট গঠনে আগ্রহী আছে সেক্ষেত্রে ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে একমত হতে পারব। যেসব দল এই বিষয়ে আপত্তি আছে তারা জানিয়েছে আবারো এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে।
তিনি বলেন, দ্বিতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে প্রস্তাব করা হয়েছিল- জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠন করার জন্য। প্রস্তাবের পর অনেক রাজনৈতিক দল এই প্রস্তাবটি সমর্থন করছে না। তার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ কমিটি নামে নতুন কমিটি করার প্রস্তাব করেছিলাম। সেখানে এনসিসির যেসব দায়দায়িত্ব ছিল, তা সীমিত করে কাঠামোগত দিক পরিবর্তন করা হয়। যেসব রাজনৈতিক দল কমিটিকে স্বাগত জানিয়েছিল তারা এর বিস্তারিত জানতে চেয়েছিল আমরা তার পরিপ্রেক্ষিতে আজকে নতুন কাঠামোগত দিকের প্রস্তাব তুলে ধরেছি।